Header Ads

নিস্তব্ধ নিশুতিনী ❑ সাবরিনা মোয়াজ্জেম ❑ পর্ব_০৫

 


নিস্তব্ধ নিশুতিনী

সাবরিনা মোয়াজ্জেম

পর্ব_৫  

ধীরে ধীরে পাভেল আর রুবার প্রেম ঘনিষ্ঠ থেকে ঘনিষ্ঠ হতে থাকে। সাথী এক বুক আশা নিয়ে অপেক্ষা করে কখন পাভেল প্রতিষ্ঠা পাবে। সাথী প্রায় ই মায়ের কাছে বায়না ধরে পাভেলকে নিয়ে ঘুরতে যাওয়ার কিন্তু মায়ের কঠোর শাসন আর বাবার ভয়ে গুটিয়ে থাকে।আর রুবার পাভেলের প্রেম ধরা ছোঁয়ার বাইরে থেকে যায়। সবাই এটাকে পাগলামো ভেবে তুচ্ছ চোখে দেখে। দেখতে পাভেল বিশ্ববিদ্যালয়ের গন্ডি পার হয় আর রুবা কলেজে, সাথী সম্মান শ্রেণীর শেষ বছরে। এর মাঝে সাথীর জন্যে অনেক পাত্র দেখা হয়। সাথী পড়ার অজুহাতে সব সমন্ধ ভেঙ্গে দেয়। আর পাভেলকে ঘীরে প্রেমের তাজমহল গড়ে। ধারে কাছে ঘুরতে যায় পাভেলকে নিয়ে। কিন্তু না বলা কথা আর বলা হয়ে উঠেনা। সাথী মনে মনে ভাবে যেদিন পাভেল চাকরি পাবে সেদিন সাথী তার মনের কথা বলবে।

এর মাঝে রুবা নব যৌবনে পা ফেলে গায়ে গতরে অদ্ভুত সুন্দরী হয়ে গেছে। চোখ ফেরানো দায়। আর রুবার সুন্দর দেহের আর প্রেমের পালে ভাসে পাভেল। ভাসতে ভাসতে কখন যে দুটি মনের পাশাপাশি দুটো দেহ এক হয়ে যায় মনের অজান্তে তারা কেউ বুঝতে পারেনি। পাভেল রুবাকে ছাড়া কিছুই বোঝেনা। রুবার তার জীবনে বেঁচে থাকার তাবিজ। এই তাবিজ হারালে পাভেল বেঁচে থাকতে পারবেনা দুনিয়ায়! আজ গিফট হিসেবে পাভেল একটা রুমাল উপহার দেয় রুবাকে! রুমাল পেয়ে রুবার কি কান্না। সারা বাড়ি বয়ে রুবা কাঁদছে। কাঁদছে কেনো পাভেলের প্রশ্ন? তুমি আমার সম্পর্ক শেষ করে দিলে ভাইয়া।কেনো? জানোনা প্রিয় মানুষকে রুমাল দিতে নেই বলেই অঝোর ধারায় কান্না। রুবা বলে রুমাল দিলে সম্পর্ক ভেঙ্গে যায়। আপন মানুষ হারিয়ে যায়! পাভেল বলে, কান্না থামাও। আমার জীবন থেকে কেউ তোমায় আলাদা করতে পারবেনা। অনেক বুঝিয়ে বলে কয়ে আহলাদির কান্না থামালো!

পাভেল চাকরি পেয়ে যায়। যখন চাকরি পায় জয়েন করার আগে রুবাদের বাসায় আসে। দু দিন থেকে তারপর জয়েন করবে। সাথী নিজেকে প্রস্তুত করে পাভেলকে কাল দুপুরে সবাই ঘুমিয়ে গেলে মনের কথা বলবে! সারারাত ভেবে ভেবে অস্থির সাথী। কি দিয়ে শুরু করবে। কোন কথাটা প্রথম বলবে। প্রস্তাব দিয়ে প্রথম কোন শাড়ি পরে পাভেলকে নিয়ে বাইরে ঘুরতে যাবে। মা বাবা বাঁধা দিলেও প্রয়োজনে তাদেরকেও জানানো হবে। দুনিয়ার সাথে যুদ্ধ করবে।তবুও পাভেলকে তার চাই। সেই ইন্টারমিডিয়েট থেকে পাভেলকে সাথী ভালোবাসে। আজ অব্ধি কোনো ছেলের দিকে মুখ তুলে তাকায়নি। অতি সুন্দরী হওয়ায় প্রচুর প্রস্তাব সে দুহাতে দূরে সরে দিয়েছে শুধু পাভেলেকে ভালোবেসে। রাত শেষ হলো সকাল হলো সবাই যার যার কাজে বিজি কিন্তু সাথী কথার জাল বুনে চলছে। আজ বড্ড বেখেয়ালি সাথি কারো কথা ই কানে যাচ্ছেনা। কাজে অকাজে শুধু বাঁধা ই পরছে। সারারাত ঘুমাতে পারিনি তারপরও স্ট্রং সাথী। সকাল গড়িয়ে কখন দুপুর হবে ভাবছে। আজ দুপুরটা বড্ড দেরি করছে হতে। দুপুর হলো। খাওয়া দাওয়া শেষ। এবার সাথী চোখ বুঝে ঘুমের ভান করলো! সবাই যখন ঘুমিয়ে ঠিক ধীর পায়ে পাভেলের রুমের কাছে এসে সাথী "থ" বনে গেলো! যা দেখলো তা ভাষায় বর্নণাতীত। দুটো দেহ দুলছে আর প্রেমের প্রলাপ বকছে! সাথী অবস হয়ে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে সোজা খালি একটা ঘরে গিয়ে স্তব্ধ হয়ে পড়ে আছে!

 

চলবে........

No comments

Powered by Blogger.