নিস্তব্ধ নিশুতিনী ❑ সাবরিনা মোয়াজ্জেম ❑ পর্ব_০৬
নিস্তব্ধ নিশুতিনী
সাবরিনা মোয়াজ্জেম
❑
রুবা স্তব্দ। পুরো পৃথিবী তার কাছে ঘোলাটে। পা দুটো বরফ জমাট। দুনিয়া ঘুরছে।সাথে ঘুরছে তার আশা আকাঙ্ক্ষা,তার এতো বছরের স্বপ্ন। অনেক চেষ্টা করছে কাঁদতে কিন্তু নাহ, কাঁদতে পারছেনা। কিছুতেই কাঁদতে পারছেনা। সাথী শুধু আঁধার খুঁজছে।কোথায় লুকাবে সাথী? এই অপার সৌন্দর্যের দুনিয়ায় তার জন্য এতো বড় শাস্তি অপেক্ষা করছে! যার জন্যে এতো ত্যাগ এতো তিতিক্ষা সে.... ছিঃ ছিঃ ভাবতে পারছেনা! বুক জমাট হয়ে আছে! সে যেনো মুক হয়ে গেছে। আজ সে চিরদিনের মতো বধির। ভাবছে, আসলে পাভেলের কোনো দোষ কি দেয়া যায়? কিন্তু রুবার সাথে এই অনৈতিক সম্পর্ক এটা কি করে মেনে নেয়া যায়? নাহ আর ভাবতে পারছেনা! নৈতিক অনৈতিকতার সমাধান সাথী কি করে দেবো? তাই বলে সুযোগে এতো বড় সর্বনাস তাও রুবার মতো সরল চঞ্চল মেয়ের সাথে! সাথী আবার অসার হয়ে যায়! সবাই ঘুম থেকে উঠতে শুরু করেছে! রুবা আলুথালু বেশে পাভেলে ঘর থেকে বের হচ্ছে সাথীর সামনে দিয়ে ই! সাথীকে চোখে পরেনি রুবার! সাথী সব দেখতে পাচ্ছে নিজের চোখে রুবার সর্বনাস! এটা কি প্রেম নাকি শরীর গত সম্পর্ক সাথী ভাবতে পারেনা! যে পাভেলকে সাথী দেবতার আসনে স্থান দিয়েছিলো সে পাভেল।.... সাথী ভাবতে পারেনা! রুবার সাথে এই সম্পর্ক নিয়ে কথা বলবে সাথী! হঠাৎ মায়ের ডাকে সারা দিয়ে সাথী ধীর পায়ে উঠে রান্না ঘরে যায়!
বহুরাত চলে যায় সাথীর ঘুম নেই। বহুদিন চলে যায় সাথী আয়নায় নিজের চেহেরা দেখেনা। পাভেল জয়েন করেছে বহু আগেই আগের মতো ছুটি ছাটাই আসা যাওয়া হচ্ছে। সাথী যেনো বিকার গ্রস্ত। সাথী ভাবলেশহীন হয়ে পরে থাকে। মেয়ের এই অবস্থা দেখে সাথীর মা বলে, পাভেল সাথীকে ঘুরিয়ে নিয়ে এসো! সাথী অনঢ় কিছুতেই যাবেনা। কারণ পাভেলের সাথে ঘোরার খায়েশ সাথীর অনেক আগেই মরে গেছে। সাথী কোনো রকম রেজাল্ট নিয়ে অর্নাস পাশ করেছে। এখন মেয়ের বিয়ে নিয়ে বাবা মা উঠে পরে লেগেছে। সাথী আর কোনো পুরুষকে বিশ্বাস করতে পারেনা। তার মনে জায়গা দেবার স্থানও নেই আর অবশিষ্ট,এই স্থান ছিলো শুধু পাভেলের জন্যে আজ তার বুকে শুধু হাহাকার ! এভাবে সাথী মা বাবাকে ঘোরাতে থাকে। রুবা ইন্টারমিডিয়েট পাশ করে ডিগ্রীতে ভর্তি হয়েছে! রুবার সোন্দর্য দিন দিন বেড়েই যাচ্ছে। পাভেল সেই রূপ সাগরে ছুটি ছাটাইয়ে ডুব দেয়! অতল থেকে কুঁড়ি তুলে আনে! সাথী সব জানে, দেখে কিছুই বলেনা!
এসব চোখের সামনে দেখতে দেখতে সাথী জ্বলে পুড়ে মরে। এবার সাথী ভাবে আর নয়। রুবাকে নিরবে জিজ্ঞেস করে কি ব্যাপার! রুবা স্পষ্ট জানিয়ে দেয় তার দুজন দুজনকে ভালোবাসে তারা বিয়ে করবে ভবিষ্যৎ জীবনে! সাথীর আর বলার কিছুই থাকেনা। সাথী মা বাবাকে বলে, সাথী বিয়ে করবে। সাথীর এই সিদ্ধান্তে মা বাবা খুব খুশি হয়ে পাত্র দেখা শুরু করে!
চলবে........


.jpg)


.jpg)
.jpg)
No comments