নিস্তব্ধ নিশুতিনী ❑ সাবরিনা মোয়াজ্জেম ❑ পর্ব_০২
নিস্তব্ধ নিশুতিনী
সাবরিনা মোয়াজ্জেম
❑
দুটো পরিবারে এই দূরে চলে যাওয়া আর তাদের মনের টানে হৃদয় খোঁজা যেনো অন্ধকারে হাতড়ানো যেনো একই কথা। দু বন্ধু দুজনার সমব্যাথী ছিলো। একই কোর্সমেট। এক সাথে ট্রেনিং একসাথে পোস্টিং এক সাথে বিয়ে বাচ্চা, কিছুইতেই যেনো এ বিরহ মেনে নিতে পারছেনা। তারপরও রিজিক সম্পর্ক সব আল্লাহর হাতে। তাই বুক উজার করে কেঁদে বিদায় দিলো। পাভেলের বাবারও কিছুদিন পরে চট্টগ্রাম বদলি হয়ে গেলো আর বাবার বন্ধু খুলনাতে। তারপর তখনকার সময়ে যোগাযোগ ব্যবস্থা তেমন ভালো ছিলোনা তাই চিঠি ই ভরসা, চিঠি লেনদেন হতো। তার মাঝে দুজনার ই অনেক বাচ্চা কাচ্চা হয় কিন্তু এখন আর নামের মিল হয়না!
কারো ছেলে বাচ্চা হলো তো কারো মেয়ে বাচ্চা হলো। তাই নামের মিল বদলীর সুত্রের মতো বদলে যায়! আর এক সুঁতোয় বাঁধা পরেনা। কিন্তু ভালোবাসার কমতি নেই। ইচ্ছে করলেই আর দেখা করা যায়না। এদিকে পাভেল বড় হতে থাকে সে ধীরে ধীরে স্কুলের গন্ডি পার হয়ে কলেজে উঠে। কলেজ পেরিয়ে যখন ইউনোভার্সিটিতে উঠলো তখন পাভেলের বাবার বন্ধু খুলনা থেকে বদলী হয়ে ঢাকায় আসে। পাভেলের বাবা কখন কার কোন বাচ্চা হলো সে খবর জানে কিন্তু বেবির পরে রুবা আর জুঁইয়ের জন্মের কথা শুনলেও তাদের কথা মনে নেই পাভেলের। পাভেল একদিন হোস্টেল থেকে পাতানো ফুফার বাসায় আসে। আসলে ফুফার চেয়ে ফুফুই যেনো বিশাল আপন! ফুফুও পাভেলকে বুকে জড়িয়ে আদর করে। ফুফু নয় যেনো চট্টগ্রাম থেকে ছেড়ে আসা আরেক মা পাভেল এখানে পেয়ে যায়!
রুবা জুঁইয়ের সাথে পরিচয় হয়। রুবা ক্লাস এইটে আর জুঁই সিক্সে। পাভেল প্রতি শুক্রবারে রুবাদের বাসায় আসে। রুবাদের বাসার নিয়ম হলো দুপুরের খাবার পর সবার ঘুমাতে হবে! নিয়ম ভঙ্গ করা যায়না। পাভেল দুপুরে খেয়ে ছাদে চলে যায়! সবাই যখন ঘুমিয়ে পরে রুবা গুটি গুটি পায়ে ছাদে চলে যায়! একহারা গড়নের পাঁচ ফিট পাঁচ ইঞ্চির শ্যামলা মেয়ে রুবা,উন্নত নাক, কোমড় অব্ধি চুল। চোখ বড় বড় টানা যুগল ভ্রু, সবে মাত্র কচি কোমল বুক দুটো উন্নত। কচি ঘাসের মতো গালের দুপাশে হালকা চুলের আবরণ। কাছ থেকে দেখা যায়! ভালো করে রুবাকে এই মাত্র দেখলো পাভেল।
পাভেল, ছাদে দাঁড়িয়ে ছাদের কার্ণিশে হাত দুটো টেস করে নিচে দেখছে ঠিক সে সময় রুবা দুহাতের নীচ দিয়ে পাভেলের ঠোঁট বরাবর মুখ সোজা কথায় চুমু ডিস্টেন্স থেকে পাভেলের গলা দুহাতে জড়িয়ে কথা বলতে লাগলো। ছাদের কার্ণিশ খুব ছোট! তাই পরে যাবার ভয়ে টাস করে রুবাকে জড়িয়ে ধরলো! রুবা পাভেলের সাথে লেপ্টে রইলো আর দু পা দিয়ে আড়মোড়া করে পাভেলের পা শক্ত করে ধরে রাখলো পাভেল যেনো নড়তে না পারে! পাভেলের ছুটে যাওয়ার চেষ্টা বৃথা। রুবা পাগলামি ছাড়ো, নাহ ছাড়বোনা! কেনো? কোন কারণ নেই! কেউ দেখে ফেলবেতো? দেখুক! বাহ তুমি খুব ডেস্পারেট মেয়ে! তাই নাকি? বলেই পাভেলের ঠোঁট বরাবর চুমু খেয়ে দৌড়ে পালালো রুবা! পাভেলের মাথা দ্বিগবিদ্বগ শূণ্য হয়ে দুলছে!
চলবে........


.jpg)


.jpg)
.jpg)
No comments