একটি ভালবাসার গল্প-১ম পর্ব
একটি ভালবাসার গল্প-১ম পর্ব
মেয়েটি অনার্সে পড়ত। সবে মাত্র গ্রাম থেকে শহরে আসে মেয়েটি। বাড়িতে মায়ের হাতের মজার মজার রান্না খাওয়ার অভ্যাস হঠাৎ করে মেয়েটি ম্যাসের বুয়ার রান্না খেতে পারত না। ও সে কি ডাল রে বাবা মনে হয় ওই ডাল দিয়ে স্নান করা যাবে। ম্যাসের খাবার ভরসা না করে বাহির থেকে কিছু কিছু খাবার সে সংগ্রহ করে রাখত।
এভাবে বেশ কিছুদিন চলতে থাকে। কনফেকশনারির দোকানদারের সঙ্গে মেয়েটির খুব একটা ভালো সম্পর্ক গড়ে ওঠে। যেমন সম্পর্ক প্রতিটা মানুষের সঙ্গে গড়ে ওঠে। একসময় দোকানদার মেয়েটির ফোন নম্বরটি চেয়ে নেয় এই থেকে মেয়েটির জীবনের সর্বনাশ নেমে আসে। শহরের মানুষের মন মানসিকতা সম্পর্কে মেয়েটির আগে কোনো ধারণা ছিল না।
শহরের স্থানীয় ছেলেরা আছে। নবাগত শহরে অবস্থানরত মেয়েদেরকে প্রেমের জালে ফাঁসিয়ে তাদের জীবনের বারোটা বাজিয়ে দেয়। আর যাই হোক দোকানদার মেয়েটির ফোন নম্বর একটি ছেলেকে দেয়। মেয়েটির ফোনে ফোন আসে। অনেক কথা হয় প্রায় প্রতিদিন ওদের মধ্যে কথা হয়। দুজন দুজনকে না দেখতেই প্রেম হয়ে যায়। ঘন্টার পর ঘন্টা কথা চলতেই থাকে।
অনেকদিন তো শুধু কথা চলছে। তারপর ছেলেটিকে দেখার জন্য মেয়েটি পরিকল্পনা করে। ওদের মধ্যে দেখা করার ব্যাপারে কথা হয় একই শহরে বাস করত অথচ শহরে দেখা করার কোন পরিকল্পনা মেয়েটির ছিল না। কিছুদিন পর মেয়েটির জন্মদিন। এটাই সুযোগ দেখা করার। প্রতিবার যেমন করে জন্মদিন পালন করা হয়। ঠিক তার চেয়ে একটু বেশি আয়োজন করে ছেলেটিকে জন্মদিনে আসার জন্য অনুরোধ করা হয়। ছেলেটি রাজি হয়ে যায়, মেয়েটিকে গ্রামে গিয়ে তাকে উইশ করে আসে। এই প্রথম তাদের দেখা ছেলেটি সুন্দর মেয়েটির তুলনায়। ফোনে কথা বলতে বলতে মেয়েটি তো আগে থেকেই ছেলেটির প্রেমে পড়ে গেছে। এখন আর ছেলেটির সৌন্দর্যের প্রশ্নের চেয়ে এখানে মনের প্রশ্নেই ঘুরপাক খাচ্ছে বেশি। মেয়েটির মনে হচ্ছে একেতো শহরের ছেলে তারপর আবার সুন্দর। মেয়েটির মনের বেদনা কি সে বুঝবে!
মেয়েটি নিজে নিজেকে অনেক প্রশ্ন করে। অবশেষে ছেলেটিকে ফোন দিয়ে তার মনের কথা জানিয়ে দেয় যে সে তাকে পছন্দ করে এবং ভালোবাসে। ছেলেটির পক্ষ থেকে না শব্দ যদি আসতো তবে ওখান থেকেই গল্পের ইতি টানা যেত। কিন্তু না তা নয় ছেলেটি তাকে মিথ্যা মিথ্যা ভালোবাসার কথা শোনাত। সে তাকে না বলেনি। যদি না বলত তবে ভালবাসার গল্প টি এখান থেকেই শেষ হত হয়তবা।
ফোনে কথা চলতেই থাকে তাদের প্রেম হয়। মনের কথা, ভবিষ্যতের পরিকল্পনা মোটামুটি। তবে এখানে আরেকটি কথা মেয়েটি লেখাপড়া করতো আর ছেলেটি কেজি স্কুলে চাকরি করতো। দুজনের হাতেই টাকা পয়সা কমছিল। রিলেশনে খরচ খুব একটা বেশি ছিল না শুধু ফোনে কথা বলা এই আরকি। এভাবে চলতে থাকত বছরের পর বছর মেয়েটির অনার্স ফাইনাল দেয়ার সময়। একদিকে লেখাপড়ার প্রতি চাপ অন্যদিকে ছেলেটি আবার অন্য একটি মেয়ের সঙ্গে রিলেশনে জরায়। যাই হোক কোন না কোন কারনে ছেলেটি মেয়েটির ফোন নম্বরটি ব্ল্যাকলিস্টে রেখে দেয়। খুব সম্ভব ঝগড়াঝাঁটি কিছু একটা হয়েছে। অনেকবার ফোনে ট্রাই করেও কোনভাবেই ছেলেটির সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারত না মেয়েটি।
অনেক কান্নাকাটি করে নিজের মনকে সান্ত্বনা দিতে লাগলো। মনের সাথে যুদ্ধ করে করে অনার্স ফাইনাল পরীক্ষা দেয়া হলো। আবার গ্রামের একটি ছেলে মেয়েটিকে খুব ভালোবাসত। একদম জীবনের চেয়েও বেশি কিন্তু এখানে আবার মেয়েটির আপত্তি ছিল। (চলবে)
No comments