ধরণীর সাথে কথোপকথন
ধরণীর সাথে কথোপকথন
শুনো নিখিল ধরণী,
তোমার বুকে হেসে খেলে জীবন করব পাত, ছিলো এতটুকু আশা! মোহনীয় ভালোবাসা! তোমার কল কল রবে বয়ে যাওয়া নদীতে করিতে সিনান;ভোরের ঘাসের ওপর সবুজ ফড়িং হয়ে ছুঁতে চাই শিশিরভেজা ধানশিষের ডগা! ঘুনটি নৌকায় পিদিম জেলে শুয়ে শুয়ে দেখব ভেবেছিলেম মাঝ রাতের অধরা চাঁদ!
মাথাটা তার কোলের ওপর, চাদনী পসরায় হয়তো মাঝি গাইত কোন বিরহী গান! আমার যে সেই সাধ পূরণ হলোনা! সেই সাধ অধরা থেকেই গেলো! আমার মুখ বেঁধে ওঁরা খুন করলো আমার ইজ্জত! আমার প্রিয় সাথীর সামনেই! অসহায়ের মত তাঁর বুকের চোখের ছটফট দেখেছি আমি! আমাকে রক্ষায় ব্যর্থ তার মুখের ভৌগলিক পরিবর্তন আমাকে আরো অসহায় করেছে! আহত করেছে! ওঁরা আমাকে খুবলে খুবলে আহত করল! ওঁদের সেই উল্লাসের রেশটুকু শুনতে শুনতে আমি জ্ঞান হারাই! ওরে নরাধম! ওরে অসুর তোরা দিবি তোদের সামনে তোদের বউকে সব খোয়াতে? তোরা জীবন থাকতে জীবনকে বাঁচতে দিলিনা,টুটি টিপে ধরলি, খুনী তোমরা! তোমরা হন্তারক!তোমরা আমাদেরকে ঠেলে দিলে এক ক্রমশ: অবক্ষয়ের আঁধারে। আমাদের মনকে দিলে কালিমার লেপন, যা প্রতি নিঃশ্বাসে ক্ষুরে ক্ষুরে খাচ্ছে! কেন এমন করলে তোরা?
সবার তো আকাশ দেখার স্বাধীনতা থাকে! তোমরা সেই অধিকারটুকু কেন কেড়ে নাও?
আমার শব্দের নীড়ে হাজার পাখির ভীড়ে মুখরিত অঙ্গন! নীরদ নির্জনে কানন কুন্তলা সবুজে শ্যামলা আমার সীমারেখা, আমার দ্রাঘিমা জুড়ে আমারই লালন! আমার স্বপ্নেরা বাম্পার শব্দের চাষ করে! সেই ক্ষেতে তোরা পঙ্গপাল হয়ে ঢুকলি, তোদেরকে ঘৃনার কীটনাশক দিলাম ছুঁড়ে! তোরা নারীকে অপমান করিস, বস্ত্রহরণ করিস জনসমক্ষে? উল্লাস করিস দূর্বলকে আঘাত করে? তোরা তো সভ্যতার কীট নরাধম!ভয় দেখিয়ে লুন্ঠিত করিস সম্ভ্রম?তোরা সকল নারীকে অপমান করলি, তোরা তোদের মা কে বোনকে অপমান করলি, ধর্ষন করলি মাকে? বোনকে?
আজকাল মেজাজের চরম বারোটা বেজে গেছে! দানব পশুদের অত্যাচারে মেয়েরা আজ বিষাদে ভয়ে বিপর্যস্ত, বিধ্বস্ত মানসিকতা। কী এক জাতি রে ভাই এত কলন্ক আমাদের? ওরে মীরজাফরের উত্তরসূরি ,ওরে রাজাকারের জারজ তোরা আর কত হামলা করবি ইজ্জ্বতে? তোদের বিবেকের তো ঐ দিন মৃত্যু হয়েছে যে মূহুর্তে তোরা কাঁচা মাংসে লোলুপ দৃষ্ঠি দিয়েছিলে। তোদেরকে কে পুষে কারা ওরা ?ক্ষমতার দাপটে অস্ত্র তুলে দেয়, তৈরি করে সভ্যতার নরাধম! তোদের গালে একশো পঁচাত্তরটি চটির আঘাত! তোদের বিবেকে ঘৃনার থু থু! তোরা আর তোদের গডফাদাররা সবাই পাপী! পারবি গডফাদারদের ইজ্জতে ছুঁতে? পারবি তোদের মা কে ওদের মা কে দ্রৌপদীর বস্ত্রহরণ করতে?
আজ আমার মেয়েরা ঘরের বাহির হতে ভয় পায়, অজানা দুঃস্বপ্নে ভয়ে অন্তরাত্মা কাঁপে! কী যে সাপে দংশিল বিবেককে? তোদের হাত হতে নাবালিকা শিশুর ও রেহাই নাই? গলির মোড়ের পাগলীটাকে ও ছিঁড়ে খুঁড়ে খেলে! গুরুজনকে শ্রদ্ধা করো নীতিবাক্যের দাফন করলে ঐদিন যেদিন বৃদ্ধার ইজ্জ্বতে কালিমা দিলে! তোমরা আর কী করতে চাও? আর কত নারীমাংস চাই তোদের ? তোরা তো মানসিক বিকারগ্র্রস্ত। তোদের ঘরে মা বাবার মিল নেই, কেও কাউকে মানে না, অবৈধ টাকায় মানুষ! তোদের কাছে ভালোটুকু আশা করা যায়?
শুধু বলবো দূর হ তোরা, চলে যা এ পৃথিবী ছেড়ে। আমাদেরকে বাঁচতে দে শান্তিতে। তোদের বাঁচার অধিকার নেই, একটাই উপায় যদি শুদ্ধতায় নেয়ে উঠতে পারিস! যদি মাকে , বউকে বোনকে সম্মান দিতে পারিস তাহলে চেষ্টাটুকু করে দেখ, শুরু হয়ে যাক অনুশোচনা, শুদ্ধতায় বিবেককে ধুয়ে নে! তা যদি করতে না পারিস চলে যা এ পৃথিবী ছেড়ে , আর হ্যাঁ সাথে তোদের সাঙ্গপাঙ্গদের ও নিতে ভুলবিনা।
হে নিখিল ধরণী তুমি দ্বিধা হও।
Shamsun Fouzia
New York, USA
No comments