প্রথম প্রেম ❑ সাবরিনা মোয়াজ্জেম ❑ পর্ব_০২
সাবরিনা মোয়াজ্জেম
❑
বাবা সরকারি চাকুরে বিধায় সরকারি
কোয়ার্টারে ই আমাদের বসবাস। অনেক দিনের চেনা জানা সব বন্ধু ফেলে আসায় নিজেকে শুন্য
লাগছে! কিছুতেই মনকে স্থির করতে পারছিলাম না। বছরের শুরু হওয়ার বাবা আমায় নবম
শ্রেণিতে ভর্তি করার সুযোগ পেলেন। রোল হলো সবার পেছনে! তাই মনটাও ভীষণ খারাপ হয়ে
গেলো! তারপর নব উদোম্যে ক্লাস শুরু করলাম। পড়াশোনায় মনোযোগী হলাম। কারণ আমি প্রথম
সাময়িক পরীক্ষায় যেনো ভালো করতে পারি! কিছু দিনের ভেতর ধীরে ধীরে বন্ধু গুছিয়ে
নিলাম। প্রথম সাময়িক পরীক্ষা হলো, যথারীতি প্রথম হলাম।
আমার পড়ার জানালা বরাবর অপজিট
আরেকটা জানালা। মাঝখানে এক চিলতে রাস্তা। হাত দিয়ে ছুঁতে না পারলেও কথা বলা যায়
অনায়াসে! একদিন পড়ছি! ঠিক ওপাশে জানালায় দাঁড়ানো লিকলিকে অপুর্ব সুন্দর একটি মেয়ে
পূর্ণিমার আলো ছড়িয়ে দাঁড়িয়ে আছে।
আমি তখন বিহবলতায় পূর্ণ দৃষ্টি
আকর্ষণ করে আছি! আমি পড়ছি আর ও দাঁড়িয়ে জানালায়! পড়ার বারোটা বেজে গেলো! প্রায়ই
সারাদিনের কোননা কোনো সময়ে আমাদের চার চোখের মিলন হয়ে ই যাচ্ছে। নাম ধাম পরিচয়
কিছুই জানিনা শুধু এই টুকু জানি এই কোয়ার্টারে থাকে বলে সে আমাদের প্রতিবেশী!
মার সাথে গল্প করছিলাম, হঠাৎ করে
কলিং বেলের আওয়াজ। মা বললো, খোকা, দরজা খুলে দে! দরজা খুলে চোখ ছানাবড়া! পাশের
বাসার মেয়েটি ও তার মা। মা আর আন্টি পরিচয়ের রেশ কাটিয়ে গল্পে মুখর। এই ফাঁকে
মেয়েটি আমার রুমে! কি করছেন ভাইয়া? পড়ছি! তা, তুমি কোন ক্লাসে পড়ো? সিক্সে! আর আমি
নাইনে! হুম, জানি! ওরে বাবা, জেনেও গেছো! হা, ভাইয়া আপনার সাথে পড়ে। আপনি অনেক
ভালো স্টুডেন্ট! আর তুমি? মোটামুটি!
ইচ্ছে করছিলো, বনলতা সেনের নাকটা
টিপে দেই! আবার কি মনে করে, তাই অনেক কিছুর ইচ্ছে থাকলেও কিছুই করা হয়নি! তবে
বুঝেছি বনলতা সেন অনেক সুন্দরী হলেও একেবারে ই অবুঝ! আর সেই থেকে শুরু আসা আর
যাওয়া, কাজে অকাজে!
চলবে........
মডেলঃ আমার মেয়ে, ডাক্তার শাহ ফারাহ।
No comments